IQNA

আর্জেন্টিনায় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা শুরু 

20:58 - November 30, 2021
সংবাদ: 3471059
তেহরান (ইকনা): মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার হবে আর্জেন্টিনার আদালতে। আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে বিশ্বের যেকোনো স্থানে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের বিচার করার যে অধিকার ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ (সর্বজনীন এখতিয়ার) নীতিতে আছে তা প্রয়োগ করতে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। দেশটির আদালত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
২০১৭ সালে জোরপূর্বক গণবাস্তুচ্যুত হয়ে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বৃহত্তম অংশ বাংলাদেশে চলে আসে। এর পর থেকেই আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে মিয়ানমারের জেনারেলদের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। রোহিঙ্গা গণহত্যা বিষয়ে আর্জেন্টিনাই প্রথম ওই নীতি প্রয়োগ করতে যাচ্ছে।
 
যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গাদের সংগঠন বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকের (ব্রুক) সভাপতি তুন খিন গতকাল রবিবার জানান, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ব্রুক প্রথমবারের মতো আর্জেন্টিনায় ওই মামলা শুরুর জন্য আবেদন করেছিল। আর্জেন্টিনার আদালত সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং ও বর্তমান নেতৃত্বের অনেক জ্যেষ্ঠ সদস্যসহ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মামলা শুরুর ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছে। আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসের ফেডারেল ক্রিমিনাল কোর্টের সেকেন্ড চেম্বার গত শুক্রবার নিশ্চিত করেছে, ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ নীতির আওতায় মিয়ানমারে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তারা মামলা শুরু করবে।
 
ব্রুক জানায়, আর্জেন্টিনার আদালত ঐতিহাসিক এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ছয়জন রোহিঙ্গা নারীর সাক্ষ্য আমলে নিয়েছেন। ওই নারীরা রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার বাহিনীর বর্বরতার শিকার হয়েছেন। তাঁদের ধর্ষণ এবং তাঁদের স্বামী ও সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে।
 
রাখাইন রাজ্যে অবশিষ্ট রোহিঙ্গারাও ধারাবাহিকভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। তাদের জীবন ও জীবিকার ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। ব্রুক বলেছে, আর্জেন্টিনার আদালতের মামলায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত সব ধরনের অপরাধের বিচারিক এখতিয়ার স্বীকার করা হয়েছে। মিয়ানমার আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি) রোম সংবিধির সদস্য না হওয়ায় শুধু রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে (আইসিসি রোম সংবিধির সদস্য) আসার মধ্য দিয়ে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের বিচার করার এখতিয়ার রাখে। এদিক থেকে ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশনের’ আওতায় আর্জেন্টিনার আদালতের বিচারিক এখতিয়ার বেশি।
 
ব্রুক এখন রোহিঙ্গা নিপীড়নের আরো তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে বিচারকাজে সহযোগিতা করবে। এ ছাড়া তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ মিয়ানমারবিষয়ক আন্তর্জাতিক তদন্ত কাঠামো থেকেও তথ্য সংগ্রহের পরামর্শ দেবে।  iqna

 

captcha